বিজ্ঞানীরা কেন বিষাক্ত মশার বংশবৃদ্ধি করতে চান
বিজ্ঞানীরা মশাদের আক্রমণ কমাতে এবং গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এলাকায়
মশাবাহিত বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে নতুন অস্ত্র হিসেবে জেনেটিক্যালি পরিবর্তিত মশার কৌশল
নিয়ে কাজ করছেন।
অস্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞানীদের একটি দল অভিনব উপায় হিসেবে কীটপতঙ্গ
নিয়ন্ত্রণ করতে বিষাক্ত পুরুষ মশাভিত্তিক কৌশল পরীক্ষা করছে। এই পদ্ধতিতে পুরুষ মশার
বংশবৃদ্ধি করা হয়, এবং যখন ওই পুরুষ মশার সঙ্গে নারী মশার মিলন ঘটে, তখন নারী মশা মৃত্যুকে
বরণ করে।
এই কৌশল প্রধানত স্ত্রী মশাদের নিধনের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে, কারণ স্ত্রী মশা নির্জনভাবে কামড়ায় এবং রক্ত পান করে, ফলে ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গু জ্বরের মতো রোগ ছড়ায়। অস্ট্রেলিয়ার ম্যাককুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী স্যাম বিচ বলেন, নতুন এই পদ্ধতিতে উপকারী প্রজাতির মশার ক্ষতি না করে কীটনাশকের মতো দ্রুত ক্ষতিকর মশা নিধনের কাজ কার্যকরভাবে করা সম্ভব। উদ্ভাবনী এই সমাধানের মাধ্যমে কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণে নতুন পরিচালনার সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে।
বিজ্ঞানীরা প্রথমে ফলের মাছির ওপর এই পদ্ধতি ব্যবহার করে সফল হয়েছেন। এই কৌশলে, বিষাক্ত পুরুষ মাছিকে স্ত্রী মাছির সাথে প্রজনন করানো হয়। এর ফলে স্ত্রী মাছির আয়ু কমে যায় এবং মাছির প্রজনন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
এখন বিজ্ঞানীরা এই পদ্ধতি মশার ওপর প্রয়োগ করার চেষ্টা করছেন। তারা মনে করেন, এই পদ্ধতির মাধ্যমে রোগ বহনকারী মশার সংখ্যা কমানো সম্ভব। তবে, তারা এমনভাবে এই পদ্ধতি ব্যবহার করবেন যাতে মানুষ বা অন্যান্য প্রাণীর কোনো ক্ষতি না হয়।
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং-এর মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা মশার জিনগত গঠন পরিবর্তন করে। এর ফলে নির্দিষ্ট জিনকে সক্রিয় বা নিষ্ক্রিয় করা যায়। এই প্রযুক্তি বহু বছর ধরে মশার জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করা হচ্ছে।বিজ্ঞানীরা এখন এই নতুন পদ্ধতি কতটা কার্যকর, তা নিয়ে বিস্তারিত গবেষণা করছেন। তাদের এই গবেষণার ফলাফল নেচার কমিউনিকেশনস জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
এই পদ্ধতির সুবিধা:
রোগ বহনকারী মশার
সংখ্যা
কমানো।
মানুষের ওপর
কীটনাশকের প্রভাব
কমবে।
পরিবেশের ক্ষতি
কম
হবে।
এই পদ্ধতির সম্ভাব্য ঝুঁকি:
অন্যান্য প্রাণীর ওপর
প্রভাব
পড়তে
পারে।
অপ্রত্যাশিত পরিণতি
হতে
পারে।
সারসংক্ষেপ:
বিজ্ঞানীরা মশা নিধনের নতুন একটি জিনগত পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন। এই পদ্ধতির মাধ্যমে রোগ বহনকারী মশার সংখ্যা কমিয়ে মানুষের স্বাস্থ্য রক্ষা করা সম্ভব হতে পারে। তবে, এই পদ্ধতির সম্ভাব্য ঝুঁকিও রয়েছে। বিজ্ঞানীরা এখন এই পদ্ধতির কার্যকারিতা এবং নিরাপত্তা নিয়ে বিস্তারিত গবেষণা করছেন।
সূত্র:
এনডিটিভি