জ্যামিতির জনক ইউক্লিড

 

ইউক্লিড: জ্যামিতির জনক


জ্যামিতির জনক ইউক্লিড




ইউক্লিড, যাকে “জ্যামিতির জনক” বলা হয়, ছিলেন একজন বিখ্যাত হেলেনিস্টিক গণিতজ্ঞ। তাঁর অসামান্য অবদান গণিতের বিভিন্ন শাখায় যেমন পাটিগণিতের মূল নিয়মাবলী, জ্যামিতি, গাণিতিক রাশি ও সংকেত, এবং সংখ্যাতত্ত্বে রয়েছে। অমূলদ রাশির আবিষ্কার গ্রিক গণিতকে সংকটে ফেলেছিল, যা থেকে উদ্ধার পেতে পাটিগণিত জ্যামিতির দিকে ঝুঁকে পড়েছিল। ইউক্লিডের গণিতের অনেকটাই জ্যামিতিক বীজগণিত হিসেবে বিবেচিত হয়।

ইউক্লিড’স এলিমেন্টস: একটি বৈজ্ঞানিক মহাকাব্য

ইউক্লিডের প্রধান বৈজ্ঞানিক গ্রন্থ “ইউক্লিড’স এলিমেন্টস” তে তলমিতি, ঘ্নমিতি এবং সংখ্যাতত্ত্বের বিভিন্ন সমস্যা যেমন অ্যালগরিদম নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এই বইটি বিজ্ঞানী গ্যালিলিও গ্যালিলি, নিকোলাস কোপারনিকাস, জোহানেস কেপলার এবং বিশেষভাবে আইজাক নিউটনকে প্রবলভাবে প্রভাবিত করেছে। তারা সবাই এই বই থেকে প্রাপ্ত জ্ঞানকে বিভিন্নভাবে কাজে লাগিয়েছেন।

যুগ যুগ ধরে প্রভাব

“ইউক্লিড’স এলিমেন্টস” বইটি প্রায় ২০০০ বছর ধরে বিভিন্নভাবে পাঠযোগ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। বইটি মূলত জ্যামিতি শাস্ত্রের বিভিন্ন স্বীকার্য নিয়ে কাজ করে। এর জনপ্রিয়তার মূল কারণ হলো প্রতিটি তত্ত্বের সুস্পষ্ট লজিক বা যুক্তি, যা ইউক্লিডের গাণিতিক যুক্তিগত বিদ্যার পরিচয় বহন করে। ইউক্লিড কিছু অংশে জ্যামিতিকে সংখ্যাতত্ত্বের মাধ্যমে প্রকাশ করার চেষ্টা করেছেন, কারণ পাটিগণিত ক্ষেত্রে তিনি খুব একটা উন্নতি করতে পারেননি বলে ধারণা করা হয়।

ইউক্লিডের জীবন ও উত্তরাধিকার

প্রকুলাসের মতে, ইউক্লিডের জন্ম হওয়া উচিত ছিল টলেমির যুগে, কারণ তিনি গ্রিক গণিতবিদ আর্কিমিডিসের কথা উল্লেখ করে বলতেন যে আর্কিমিডিসেরও আগে ইউক্লিড তাঁর তত্ত্বসমূহ উপস্থাপন করেছিলেন। প্রকুলাস এই কথাটি টলেমিকে বলেন, যখন টলেমি প্রকুলাসের কাছে জানতে চেয়েছিলেন ইউক্লিড’স এলিমেন্টস ছাড়া জ্যামিতি শেখার আর কোনো সহজ উপায় বা পদ্ধতি আছে কিনা।

ইউক্লিডের জন্ম ও মৃত্যু সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানা যায়নি, শুধু জানা যায় তিনি মিশরের আলেকজান্ড্রিয়ায় বসবাস করতেন। তাঁর রচিত তিনটি বিখ্যাত বই হলো ইউক্লিড’স এলিমেন্টস, ইউক্লিডীয়ান জিওমেট্রি, এবং ইউক্লিডিয়ান অ্যালগরিদম। ছাপাখানা আবিষ্কারের পর সর্বপ্রথম মুদ্রিত হওয়া বইগুলোর মধ্যে ইউক্লিড’স এলিমেন্টস অন্যতম। বইটি ১০০০ এরও বেশি বার মুদ্রিত হয়েছে।

ইউক্লিডের অবদান শুধু গণিতের জগতে নয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিভিন্ন শাখায়ও অমর হয়ে থাকবে। তাঁর তত্ত্ব ও গবেষণা আজও আমাদের শিক্ষা ও গবেষণার মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করছে। ইউক্লিডের এই অসামান্য অবদান আমাদেরকে গণিতের জগতে নতুন দিগন্ত উন্মোচনে অনুপ্রাণিত করে।

*

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post