রহস্যময় মহাবিশ্ব

রহস্যময় মহাবিশ্ব: জ্যোতির্বিজ্ঞানের ইতিহাস ও পর্যবেক্ষণ

বিজ্ঞান রহস্যময় মহাবিশ্ব

প্রাচীনকাল থেকেই কৌতূহলী মানুষ আকাশের প্রাকৃতিক ঘটনাগুলো অপার বিস্ময়ে দেখছে এবং গভীর পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে অনেক প্রাকৃতিক ঘটনার রহস্য উন্মোচন করেছে। মহাবিশ্বের মহাজাগতিক ঘটনাবলি বৈজ্ঞানিক উপায়ে পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করার যে জ্যোতির্বিজ্ঞান, তার ইতিহাস অনেক পুরনো। খালি চোখে মহাকাশ পর্যবেক্ষণের যুগ আমরা পার হয়ে এসেছি। ১৬১০ সালে গ্যালিলিও যখন আকাশের দিকে টেলিস্কোপ তাক করে বৃহস্পতি গ্রহের উপগ্রহ আবিষ্কার করলেন, জ্যোতির্বিজ্ঞানের আকাশে নতুন সূর্যোদয় হলো। এর আগের প্রায় আড়াই হাজার বছরের জ্যোতির্বিজ্ঞান গবেষণার ধরন বদলে গেল গ্যালিলিওর টেলিস্কোপের মাধ্যমে। পরবর্তী কয়েকশ বছরের মধ্যে একের পর এক তৈরি হলো অনেক শক্তিশালী টেলিস্কোপ। টেলিস্কোপ দিয়ে মহাকাশ পর্যবেক্ষণের জন্য তৈরি হলো অবজারভেটরি বা মানমন্দির। পৃথিবী থেকেই এসব টেলিস্কোপ দিয়ে মহাকাশ পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে।

কিন্তু পৃথিবীতে বসানো টেলিস্কোপ যত শক্তিশালীই হোক, তাদের কিছু গুণগত সীমাবদ্ধতা দূর করা সম্ভব হয়নি। যে কোনো টেলিস্কোপের প্রধান কাজ হলো মহাকাশ থেকে আসা আলো অনুসন্ধান করে শনাক্ত করা এবং সেই আলো সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করা। সুদূর মহাকাশ থেকে আলো পৃথিবীতে আসার সময় পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের মিথস্ক্রিয়ায় অংশ নেয়। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল মহাকাশের আলোর কিছু অংশ শোষণ করে ফেলে। আবার কিছু অংশ পৃথিবীর ধূলিকণার গায়ে লেগে বিক্ষিপ্ত হয়। আলোর স্ক্যাটারিং থিওরি বা বিক্ষেপণের তত্ত্ব থেকে আমরা জানি যে আলোর বিক্ষেপণের ফলেই দিনের বেলায় পৃথিবীর আকাশ নীল দেখায়। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের কারণে মহাকাশের মহাজাগতিক ঘটনাগুলো নির্বিঘ্নে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হয় না। কোটি আলোকবর্ষ দূরের উজ্জ্বল নক্ষত্রের আলো পৃথিবীতে আসতে আসতে উজ্জ্বলতা হারায়। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের কারণে দীপ্তমান তারাগুলোও মিটমিট করতে থাকে পৃথিবীর আকাশে। ফলে মহাকাশের অনেক রহস্যই অধরা থেকে যায় পৃথিবীতে স্থাপিত সবচেয়ে শক্তিশালী টেলিস্কোপগুলোতেও।

*

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post

POST ADS-1

POST ADS--2