চিরায়ত বাংলার নৌকা শিল্প: ঐতিহ্যের স্রোতে ভাসমান

 

চিরায়ত বাংলার নৌকা শিল্প:

চিরায়ত বাংলার নৌকা শিল্প:   বাংলাদেশে নৌকা অন্যতম একটি প্রাচীন পরিবাহন মাধ্যম। বিশ্বের অনেক দেশে নৌকা এখনও স্থানীয় যাতায়াতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে, পণ্য পরিবহনের জন্যও এটি গুরুত্বপূর্ণ। গঠনশৈলী ও পরিবহনের ওপর নির্ভর করে বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রকার নৌকার প্রচলন ছিল। এগুলো নিয়েই আজকের আয়োজন-  ডিঙ্গি: বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি পরিচিত একটি নৌকা।  আকারে ছোট হওয়ায়  এটি নদী পারাপার বা অল্প পরিমাণ পণ্য পরিবহনে সর্বাধিক ব্যবহৃত হয়। এটি চালাতে একজন মাঝিই যথেষ্ট, মাঝে মাঝে এতে পালও লাগানো হয়। নদী তীর বা হাওর-বাওরের প্রায় সকল মানুষ এই নৌকাটি ব্যবহার করে।  কোষা: কোষা দেখা যায় সাধারণত চরাঞ্চলে বা বিলে বর্ষায়। এর গলুইয়ের কাঠ বড় থাকে না। অঞ্চল ভেধে এর আকার কমবেশি হয়। কোষা পারিবারিক নৌকা হিসেবে হাটবাজারসহ স্বল্প দূরত্বে চলাচলের কাজে লাগে। ৮জন যাত্রী বহন করা যায় এমন নৌকাই  আদর্শ কোষা নৌকা । এতে ছই থাকে না। এটি বৈঠা দিয়ে চালানো যায় , তবে অগভীর জলে লগি দিয়েও চালানো যায়। ভারি ও বেশি ওজন বহনের উপযোগী কোষাকে বলা হয় ‘ঘাসী নৌকা’।  ডোঙা: তালগাছের কাণ্ড কুঁদে বানানো  হয় ডোঙা।  এটি বেশ টেকসই ও পার্শ্বদেশ বা বিস্তার এতই কম যে, এতে পাশাপাশি দু’জন বসা কষ্টসাধ্য। একটু বেসামাল হলে,ডোঙ্গা উল্টে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। ডোঙায় দাঁড়লে যাতে তলা ফেঁসে না যায়, সেজন্য এর তলা বেশ মোটা রাখা হয়। তাল গাছের কাণ্ড সহজে পচে না বলে ডোঙা কয়েক বছর ব্যবহার করা যায়।  সাম্পান: সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ে ভেসে বেড়ায় সাম্পান।সাম্পান নৌকা বেশি দেখা যায় চট্টগ্রাম ও কুতুবদিয়া।  সাম্পান নৌকাগুলির সামনের দিকটা উঁচু আর বাঁকানো, পেছনটা থাকে সোজা। প্রয়োজনে এর সঙ্গে পাল থাকে আবার কখনও থাকে না। একমাঝি চালিত এই নৌকাটি মালামাল পরিবহনের জন্য ব্যবহার হয়। এক সময় বড় আকারের সাম্পানও দেখা গেলেও এখন তা বিলুপ্ত। সাতজন মাঝি থাকতো আর থাকতো তিন কোণা আকারের তিনটি করে পাল।  বজরা: আগের দিনে ধনী লোকেদের  শখের  নৌকা ছিল বজরা।  ভ্রমণে যাওয়ার জন্য বেশ জনপ্রিয় ছিল ‘বজরা’।  ধনী লোকেরা  বজরাতে  এক রকম ঘরবাড়ি বানিয়ে নিতেন। ফলে এতে খাবার দাবারসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধাই থাকতো। কোনটিতে আবার পালও থাকতো। এতে থাকতো চারজন করে মাঝি। বজরা মূলত সিরাজগঞ্জ ও পাবনা অঞ্চলে বেশি  দেখা যেত।  গয়না: গয়না একটি মাঝারি আকৃতির নৌকা ।  কিশোরগঞ্জ অঞ্চলে বেশি জনপ্রিয় । মূলত যাত্রী পারাপারের কাজেই এদের ব্যবহার করা হতো। একসঙ্গে প্রায় ২৫-৩০ জন যাত্রী বহন করার যেতো এই নৌকায়। রাজশাহী অঞ্চলে এর থেকেও বড় আকারের গয়না নৌকা পাওয়া যেতো। বর্তমানে এই নৌকাও বিলুপ্তির পথে।  বাইচের নৌকা: বাইচের নৌকা লম্বায় দেড়শ থেকে দুইশ ফুট পর্যন্ত হয়। প্রতিযোগিতার সময় এতে পঁচিশ থেকে একশ জন পর্যন্ত মাঝি থাকে। আগে নবাব বাদশাহরা বাইচের আয়োজন করতেন। এইসব বাইচের নৌকার আবার সুন্দর সুন্দর নাম দেওয়া হতো, যেমন- পঙ্খীরাজ, ঝড়ের পাখি, দ্বীপরাজ, সোনার তরী ইত্যাদি। কিশোরগঞ্জ, পাবনা, ময়মনসিংহ, গোপালগঞ্জ,  ফরিদপুর, নোয়াখালী ও কুমিল্লা অঞ্চলে এসব নৌকা ছিল।  বাচারি নৌকা​: বাচারি  নৌকা ছিল বাণিজ্যিক নৌকা । ৪০ টন ওজনের ভার বহনে সক্ষম। বাছারি গত কয়েক দশক আগেই বিলুপ্তির পাতায় চলে গেছে।  বাতনাই: মালবাহী বজরার একটি সংস্করণ হল 'পদি' বা বাতাইন নৌক।খুলনা অঞ্চলে মালামাল পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত হয়। এই বজরাগুলো অনেক বড় হয়। এ নৌকার বড় খরচ ছিল এর লোকবল। এটা এতটাই ভারি হতো যে এটি চালাতে ১৭-১৮ জন মাঝি লাগতো।  ময়ূরপঙ্খী: রাজা বাদশাহদের শৌখিন নৌকার নাম হলো ‘ময়ূরপঙ্খী’। এর সামনের দিকটা দেখতে ময়ূরের মতো বলে এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘ময়ূরপঙ্খী’। চারজন মাঝি এই নৌকা চালানোর জন্য যথেষ্ট। এই নৌকায়  দুটো করে পাল থাকতো।  বালার: কুষ্টিয়া অঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য প্রাচীনকাল থেকে এখনও  বালার নৌকার ব্যবহার দেখা যায়।  এ নৌকা আকারে অনেক বড় হয় এবং প্রায় ১২-৫৬ টন মালামাল বহন করতে পারে। আর বৈঠা বায় ১০-১২ জন মাঝি।  পানসী: নৌকায় চড়ে দূরে কোথাও যাওয়ার একমাত্র ও অন্যতম মাধ্যম ছিল পালতোলা পানসি। পানসীতে চড়ে মাঝি মাল্লার ভাটিয়ালি, মুর্শিদী আর মারফতি গান গেয়ে মন কেড়ে নিতো যাত্রীদের। বরিশাল অঞ্চলে এটি প্রচুর দেখা যেতো।  পাতাম: সিলেট ও কিশোরগঞ্জ অঞ্চলের এক ধরনের যুগল নৌকা। দুটি নৌকাকে পাশাপাশি রেখে ‘পাতাম’ নামক লোহার কাঠাটা দিয়ে যুক্ত করে এ যুগল নৌকা তৈরি করা হয়। একে অনেক সময় জোড়া নাও বলে। এ নৌকা মূলত মালামাল পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত হয়। এতে মাঝি ছাড়া ৪জন দাঁড়টানা লোক থাকে। এতে একটি পাল খাটানোর ব্যবস্থা থাকে। এক সময় এই নৌকা  ছুঁইওয়ালা / একমালাই: পালতোলা পানসির মতো ছুঁইওয়ালা একমালাই ছিলো দূরপাল্লার নৌকা। বরিশালের দুশুমি গ্রাম ও আশপাশের এলাকাসহ উজিরপুর উপজেলার জল্লা ইউনিয়নের শতাধিক পরিবারের সদস্যরা ছুঁইওয়ালা নৌকার মাঝি হিসেবে বাপদাদার পেশাকে এখনো আঁকড়ে ধরে রেখেছে।  মলার নৌকা: পাবনা অঞ্চলে একসময় তৈরি হতো মলার নৌকা। এটাও মূলত মালামাল পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত হতো। ১২ থেকে ৫৬ টন ওজনের ভার বহনে সক্ষম এ নৌকায় পাল থাকে দু’টি, দাঁড় ছয়টি।  ইলশা নৌকা: ইলিশ মাছ আহরণে জেলেরা এই নৌকা ব্যবহার করে বলে এরূপ নামকরণ করা হয়েছে।  সওদাগরী নৌকা: ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য সওদাগরগণ এই নৌকা ব্যবহার করে দেশ দেশান্তরে ঘুরে বেড়াতেন। এসব নৌকায় বহু জন বহন করার ক্ষমতা ছিল।

বাংলাদেশে নৌকা অন্যতম একটি প্রাচীন পরিবাহন মাধ্যম। বিশ্বের অনেক দেশে নৌকা এখনও স্থানীয় যাতায়াতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে, পণ্য পরিবহনের জন্যও এটি গুরুত্বপূর্ণ। গঠনশৈলী ও পরিবহনের ওপর নির্ভর করে বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রকার নৌকার প্রচলন ছিল। এগুলো নিয়েই আজকের আয়োজন-

ডিঙ্গি:

বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি পরিচিত একটি নৌকা। আকারে ছোট হওয়ায় এটি নদী পারাপার বা অল্প পরিমাণ পণ্য পরিবহনে সর্বাধিক ব্যবহৃত হয়। এটি চালাতে একজন মাঝিই যথেষ্ট, মাঝে মাঝে এতে পালও লাগানো হয়। নদী তীর বা হাওর-বাওরের প্রায় সকল মানুষ এই নৌকাটি ব্যবহার করে।

কোষা:

কোষা দেখা যায় সাধারণত চরাঞ্চলে বা বিলে বর্ষায়। এর গলুইয়ের কাঠ বড় থাকে না। অঞ্চল ভেধে এর আকার কমবেশি হয়। কোষা পারিবারিক নৌকা হিসেবে হাটবাজারসহ স্বল্প দূরত্বে চলাচলের কাজে লাগে। ৮ জন যাত্রী বহন করা যায় এমন নৌকাই আদর্শ কোষা নৌকা। এতে ছই থাকে না। এটি বৈঠা দিয়ে চালানো যায়, তবে অগভীর জলে লগি দিয়েও চালানো যায়। ভারি ও বেশি ওজন বহনের উপযোগী কোষাকে বলা হয় ‘ঘাসী নৌকা’।

ডোঙা:

তালগাছের কাণ্ড কুঁদে বানানো হয় ডোঙা। এটি বেশ টেকসই ও পার্শ্বদেশ বা বিস্তার এতই কম যে, এতে পাশাপাশি দু’জন বসা কষ্টসাধ্য। একটু বেসামাল হলে, ডোঙ্গা উল্টে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। ডোঙায় দাঁড়লে যাতে তলা ফেঁসে না যায়, সেজন্য এর তলা বেশ মোটা রাখা হয়। তাল গাছের কাণ্ড সহজে পচে না বলে ডোঙা কয়েক বছর ব্যবহার করা যায়।

সাম্পান:

সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ে ভেসে বেড়ায় সাম্পান। সাম্পান নৌকা বেশি দেখা যায় চট্টগ্রাম ও কুতুবদিয়া। সাম্পান নৌকাগুলির সামনের দিকটা উঁচু আর বাঁকানো, পেছনটা থাকে সোজা। প্রয়োজনে এর সঙ্গে পাল থাকে আবার কখনও থাকে না। এক মাঝি চালিত এই নৌকাটি মালামাল পরিবহনের জন্য ব্যবহার হয়। এক সময় বড় আকারের সাম্পানও দেখা গেলেও এখন তা বিলুপ্ত। সাতজন মাঝি থাকতো আর থাকতো তিন কোণা আকারের তিনটি করে পাল।

বজরা:

আগের দিনে ধনী লোকেদের শখের নৌকা ছিল বজরা। ভ্রমণে যাওয়ার জন্য বেশ জনপ্রিয় ছিল ‘বজরা’। ধনী লোকেরা বজরাতে এক রকম ঘরবাড়ি বানিয়ে নিতেন। ফলে এতে খাবার দাবারসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধাই থাকতো। কোনটিতে আবার পালও থাকতো। এতে থাকতো চারজন করে মাঝি। বজরা মূলত সিরাজগঞ্জ ও পাবনা অঞ্চলে বেশি দেখা যেত।

গয়না:

গয়না একটি মাঝারি আকৃতির নৌকা। কিশোরগঞ্জ অঞ্চলে বেশি জনপ্রিয়। মূলত যাত্রী পারাপারের কাজেই এদের ব্যবহার করা হতো। একসঙ্গে প্রায় ২৫-৩০ জন যাত্রী বহন করার যেতো এই নৌকায়। রাজশাহী অঞ্চলে এর থেকেও বড় আকারের গয়না নৌকা পাওয়া যেতো। বর্তমানে এই নৌকাও বিলুপ্তির পথে।

বাইচের নৌকা:

বাইচের নৌকা লম্বায় দেড়শ থেকে দুইশ ফুট পর্যন্ত হয়। প্রতিযোগিতার সময় এতে পঁচিশ থেকে একশ জন পর্যন্ত মাঝি থাকে। আগে নবাব বাদশাহরা বাইচের আয়োজন করতেন। এইসব বাইচের নৌকার আবার সুন্দর সুন্দর নাম দেওয়া হতো, যেমন- পঙ্খীরাজ, ঝড়ের পাখি, দ্বীপরাজ, সোনার তরী ইত্যাদি। কিশোরগঞ্জ, পাবনা, ময়মনসিংহ, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, নোয়াখালী ও কুমিল্লা অঞ্চলে এসব নৌকা ছিল।

বাচারি নৌকা:

বাচারি নৌকা ছিল বাণিজ্যিক নৌকা। ৪০ টন ওজনের ভার বহনে সক্ষম। বাছারি গত কয়েক দশক আগেই বিলুপ্তির পাতায় চলে গেছে।

বাতনাই:

মালবাহী বজরার একটি সংস্করণ হল ‘পদি’ বা বাতাইন নৌকা। খুলনা অঞ্চলে মালামাল পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত হয়। এই বজরাগুলো অনেক বড় হয়। এ নৌকার বড় খরচ ছিল এর লোকবল। এটা এতটাই ভারি হতো যে এটি চালাতে ১৭-১৮ জন মাঝি লাগতো।

ময়ূরপঙ্খী:

রাজা বাদশাহদের শৌখিন নৌকার নাম হলো ‘ময়ূরপঙ্খী’। এর সামনের দিকটা দেখতে ময়ূরের মতো বলে এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘ময়ূরপঙ্খী’। চারজন মাঝি এই নৌকা চালানোর জন্য যথেষ্ট। এই নৌকায় দুটো করে পাল থাকতো।

বালার:

কুষ্টিয়া অঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য প্রাচীনকাল থেকে এখনও বালার নৌকার ব্যবহার দেখা যায়। এ নৌকা আকারে অনেক বড় হয় এবং প্রায় ১২-৫৬ টন মালামাল বহন করতে পারে। আর বৈঠা বায় ১০-১২ জন মাঝি।

পানসী:

নৌকায় চড়ে দূরে কোথাও যাওয়ার একমাত্র ও অন্যতম মাধ্যম ছিল পালতোলা পানসি। পানসীতে চড়ে মাঝি মাল্লার ভাটিয়ালি, মুর্শিদী আর মারফতি গান গেয়ে মন কেড়ে নিতো যাত্রীদের। বরিশাল অঞ্চলে এটি প্রচুর দেখা যেতো।

পাতাম:

সিলেট ও কিশোরগঞ্জ অঞ্চলের এক ধরনের যুগল নৌকা। দুটি নৌকাকে পাশাপাশি রেখে ‘পাতাম’ নামক লোহার কাঠাটা দিয়ে যুক্ত করে এ যুগল নৌকা তৈরি করা হয়। একে অনেক সময় জোড়া নাও বলে। এ নৌকা মূলত মালামাল পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত হয়। এতে মাঝি ছাড়া ৪ জন দাঁড়টানা লোক থাকে। এতে একটি পাল খাটানোর ব্যবস্থা থাকে।

ছুঁইওয়ালা / একমালাই: ঐতিহ্যের দূরপাল্লার নৌকা

ছুঁইওয়ালা একমালাই, পালতোলা পানসির মতোই, ছিলো দূরপাল্লার নৌকা। বরিশালের দুশুমি গ্রাম ও আশপাশের এলাকাসহ উজিরপুর উপজেলার জল্লা ইউনিয়নের শতাধিক পরিবারের সদস্যরা ছুঁইওয়ালা নৌকার মাঝি হিসেবে বাপদাদার পেশাকে এখনো আঁকড়ে ধরে রেখেছে। এই নৌকাগুলো তাদের জীবিকার প্রধান মাধ্যম এবং ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

মলার নৌকা

পাবনা অঞ্চলে একসময় তৈরি হতো মলার নৌকা। এটি মূলত মালামাল পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত হতো। ১২ থেকে ৫৬ টন ওজনের ভার বহনে সক্ষম এই নৌকায় দু’টি পাল এবং ছয়টি দাঁড় থাকে। মলার নৌকা ছিলো অত্যন্ত কার্যকরী এবং বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত হতো।

ইলশা নৌকা

ইলিশ মাছ আহরণে জেলেরা যে নৌকা ব্যবহার করে, তাকে ইলশা নৌকা বলা হয়। এই নৌকাগুলো ইলিশ মাছ ধরার জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয় এবং জেলেদের জীবিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

সওদাগরী নৌকা

ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য সওদাগরগণ সওদাগরী নৌকা ব্যবহার করে দেশ দেশান্তরে ঘুরে বেড়াতেন। এসব নৌকায় বহু জন বহন করার ক্ষমতা ছিল এবং এটি বাণিজ্যিক কাজে অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল। সওদাগরী নৌকা ছিলো বাণিজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম এবং এটি দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতো।

বাংলাদেশের নৌকার এই বৈচিত্র্য আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। প্রতিটি নৌকার নিজস্ব গঠনশৈলী ও ব্যবহারিক দিক রয়েছে, যা আমাদের দেশের নদীমাতৃক জীবনের সাথে গভীরভাবে জড়িত।

*

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post